বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫৯ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

স্ত্রীর মামলায় দাফনের ৬ মাস পর তোলা হলো আওয়ামী লীগ নেতার লাশ

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪
  • ১০ বার পঠিত

মুন্সীগঞ্জে দাফনের ছয় মাস পর কবরস্থান থেকে আওয়ামী লীগ নেতা আজগর হোসেন চঞ্চল বেপারীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর শরীফ ফাহাদের উপস্থিতিতে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়।

নিহত আজগর হোসেন চঞ্চল টংগিবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলে নিজের কাজে বাড়ির বাইরে যান চঞ্চল বেপারী। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে চঞ্চল তার স্ত্রীর মোবাইলে কল দিলে তার সঙ্গে কিছু লোকের বাগবিতণ্ডা ও চেঁচামেচি শুনতে পান। এ সময় আপনার সঙ্গে কে বা কারা আছে জানতে চাইলে চঞ্চল জানান, তার সঙ্গে বালিগাঁও গ্রামের রিটু, হাবিবুর রহমান সোহেল, গহি নিতাই দাস ও উত্তম সরকার সানীসহ আরো কয়েকজন রয়েছেন।

পরে ওইদিন রাতেই ইসলামপুর রাস্তার পাশে মুমূর্ষু অবস্থায় বালিগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী আমির হোসেন চঞ্চলকে দেখতে পান। পরে তিনি তাকে বালিগাঁও ডক্টরস ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠান। পরবর্তীতে গত ১১ সেপ্টেম্বর আসগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চঞ্চল।

ওই সময় এলাকার কতিপয় ব্যক্তি সুমি আক্তারকে বুঝান যে, চঞ্চল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে‌ পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) ছাড়াই চঞ্চলকে কৌশলে দাফন করতে বাধ্য করান তারা। পরবর্তীতে সুমি আক্তার জানতে পারেন, তার স্বামীর বুকের হাড় ৯টি ভাঙা ছিল এবং পিঠের হাড় ৩ জায়গায় ভাঙা ছিল। দুষ্কৃতকারীরা চঞ্চল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বললেও মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনায় যে ধরনের আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কথা সেই ধরনের আঘাত নেই।

পরে চঞ্চলের সঙ্গে থাকা লোকজনকে তিনি কীভাবে মারা গেছেন- সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারায় চঞ্চলের স্ত্রী বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতে মামলা করেন। সেখান থেকেও মামলাটি খারিজ করে দিলে মুন্সীগঞ্জ জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার প্রেক্ষিতে টংগিবাড়ী থানাকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে নিতে আদেশ দেন আদালত।

এ বিষয়ে মামলার বাদী সুমী আক্তার বলেন, যখন আমার স্বামী চঞ্চল মারা যান, তখন আমি অনেক অসুস্থ ছিলাম। তার কয়েকদিন আগে আমার তৃতীয় সিজার করা হয়। কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আগের আরো দুই মেয়ে রয়েছে। আমি অসুস্থ থাকায় বুঝতে পারিনি যে, আমার স্বামীকে কেউ মেরে ফেলেছেন। যারা আমার স্বামীরে মেরেছেন, তারা দ্রুত কৌশলে তার দাফনের কাজ সেরে ফেলেন। পরে জানতে পারলাম, ওরা পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে মেরে রাস্তায় ফেলে রেখেছিলেন। বালিগাঁও গ্রামের মোফাজ্জলের ছেলে রিটু, যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান সোহেল, নিতাই দাস, উত্তম সরকার রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে পরিকল্পিতভাবে মেরে আমার স্বামীকে রাস্তার নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যান। আমি তাদের আসামি করে মুন্সীগঞ্জ আদালতে মামলা করেছি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টংগিবাড়ী থানার এসআই আল মামুন বলেন, আদালতের নির্দেশে টংগিবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় আদালত মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। সে মোতাবেক বৃহস্পতিবার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com